Saturday, September 28, 2013

Investigation report of government on Taindaung attack

The attack on indigenous hill peoples cooking up a story of abduction


তাইন্দংয়ের ঘটনায় সরকারের তদন্ত প্রতিবেদন

অপহরণের নাটক সাজিয়ে পাহাড়িদের ওপর হামলা

শিশির মোড়ল |

অপহরণের নাটক সাজিয়ে গত ৩ আগস্ট খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নের পাহাড়িদের ওপর হামলা করা হয়েছিলহামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ৩৭৩টি আদিবাসী পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেওই ঘটনায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাইন্দংয়ের ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে

প্রতিবেদনে ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং এলাকায় যেসব ইউপিডিএফ সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয় পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেন পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করল না, সে বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে বলা হয়
আদিবাসীদের সংগঠন ক্যাপেইং ফাউন্ডেশন ঘটনা তদন্তে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে আবেদন করেছিলতার পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকার কমিশন ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করে

মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব ১৭ থেকে ১৯ আগস্ট সরেজমিন তদন্ত করেনতিনি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিজিবির কর্মকর্তা, ইউপিডিএফ নেতা, স্থানীয় বাঙালিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেনতিনি কিছু মানুষের লিখিত জবানবন্দি নেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়প্রতিবেদনটি ২৬ আগস্ট জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টায় কামাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি নিজের মুঠোফোন থেকে নিজের অপহরণের কথা লোকজনকে জানাতে থাকেনতিনি তাঁকে উদ্ধারের জন্য স্থানীয় ক্রসিং পয়েন্ট’-এ যেতে বলেন২০-২৫ মিনিটের মধ্যে এক হাজার বাঙালি সেখানে জড়ো হয়আদিবাসী নেতৃস্থানীয়দেরও সেখানে আসতে বলা হয়

কিন্তু সেখানে গিয়ে ওই কামালকে না পেয়ে জড়ো হওয়া বাঙালিরা উত্তেজিত হয়ে পড়েতারা উপস্থিত আদিবাসীদের ওপর চড়াও হয়১২ জন আদিবাসীকে বেধড়ক মারধর করেএকই সঙ্গে বাঙালিদের আরেকটি দল আদিবাসীদের পাড়ায় ঢুকে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেবেলা তিনটা পর্যন্ত এই হামলা চলে

তদন্তে দেখা গেছে, ৩৮টি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ৩৩৫টি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছেদুটি কিয়াং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়আতঙ্কে ৫৪১টি পরিবার এলাকা ছেড়ে চলে যায়

প্রতিবেদনে বলা হয়, কিছু বাঙালি দুর্বৃত্ত ষড়যন্ত্র করে পাহাড়িদের বিরুদ্ধে বাঙালিদের খেপিয়ে তুলে এই ঘটনা ঘটিয়েছেঘটনার মূলে আছে আদিবাসী ও বাঙালিদের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতা

তাইন্দং ইউনিয়নটি মাটিরাঙ্গা উপজেলা সদর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে ভারত সীমান্তেএই ইউনিয়নে ১৩ হাজার ৯৩৫ জন বাসিন্দার মধ্যে দুই হাজার ৯০৯ জন আদিবাসীএর মধ্যে আদিবাসী-অধ্যুষিত বগাপাড়া, সর্বেশ্বরপাড়া, মনুদাশপাড়া, বান্দরশিংপাড়া ও তালুকদারপাড়ায় হামলার ঘটনা ঘটেঘটনার দিনই এসব পাড়ার অধিকাংশ বাসিন্দা বাড়িঘর ছেড়ে ভারত সীমান্তে অবস্থান নেনপরের দিন সরকারের উচ্চপর্যায় উদ্যোগ নিলে তারা বাড়িঘরে ফিরে আসে

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ঘটনায় দেশের ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়েছেতবে এই ক্ষতির হিসাব নিরূপণ করা হয়নি

প্রশাসনকে নিন্দা: ৩১ জুলাই রাত আড়াইটায় খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়েছিলেন পুলিশ সুপার, বিজিবি কমান্ডার, মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছেতদন্ত প্রতিবেদনে সেই খুদে বার্তা হুবহু তুলে ধরা হয়েছেতাতে বলা হয়েছিল: মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং সীমান্ত এলাকায় বাঙালি ও পাহাড়িদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছেএমন একটি খবর পেয়েছিএ ব্যাপারে আপনার বাহিনী/পুলিশকে সতর্ক করার এবং পাহাড়িদের সীমান্ত অতিক্রম বন্ধ করার অনুরোধ জানাচ্ছি
প্রতিবেদনে বলা হয়, জেলা প্রশাসক একই সঙ্গে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটও বটেসেই জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সতর্ক বার্তাকে পুলিশ প্রশাসন ও বিজিবি আমলেই নেয়নি, আদিবাসীদের নিরাপত্তার জন্য কোনো বাড়তি পদক্ষেপ নেয়নিএ অবহেলা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তদন্ত করে দেখতে পারে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার শেখ মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গভীর রাতে খুদে বার্তা পাঠিয়ে জেলা প্রশাসক তাঁর দায়িত্ব শেষ করতে পারেন নাতিনি সরাসরি আমার সঙ্গে কথা বলতে পারতেনপুলিশ সুপার কোনো সুনির্দিষ্ট সংস্থা বা বাহিনীর নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘এখানে অনেকে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা কাজ করেতাদের পক্ষ থেকে আমাদের কোনো সতর্ক বার্তা পাঠানো হয়নি
প্রতিবেদনে পুলিশ ও বিজিবির ভূমিকার সমালোচনা করা বলা হয়, পুলিশ ও বিজিবির সামনে ১২ জন পাহাড়িকে আহত করা হয়েছেএ ঘটনায় কোনো বাঙালি আহত হয়নিপুলিশ ও বিজিবি একটিও গুলি ছোড়েনি, লাঠিপেটা করেনি তারা সশস্ত্র অবস্থায় নির্বিকার ছিলঘটনাস্থলে আরও কয়েক গুণ পুলিশ-বিজিবি থাকলেও একই অবস্থা হতো বলে তদন্তে মনে হয়েছে

প্রতিবেদনে একাধিকবার স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সমালোচনা করা হয়েছেপুলিশের দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছেবলা হয়েছে, এত বড় ঘটনায় পুলিশের নিজের উদ্যোগেই মামলা করার দরকার ছিলমামলা কেন দুই দিন পরে হলো, তার ব্যাখ্যা পুলিশের দেওয়া উচিত

তাইন্দং অনেক দূরেউল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার সময় পুলিশ সেখানে ছিল নাখবর পেয়ে গেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেতিনি জানান, এ পর্যন্ত ১৩ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে
যাঁর কথিত অপহরণ নিয়ে এই ঘটনা, সেই কামাল হোসেনের মা, মেয়ে ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে কামাল হোসেনের বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়নিতাঁর মোটরসাইকেল অপহরণকারীরা নেয়নি, তাঁর কাছে মুক্তিপণ চায়নি, তাঁকে মারধরও করেনিঅপহরণের ঘটনাকে সাজানো নাটক বলা হয়েছে প্রতিবেদনে

জানতে চাইলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রথম আলোকে বলেছে, কমিশন প্রতিবেদনটি খতিয়ে দেখবে এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সুপারিশ করবে 

Related Link:

On Friday, 23 August the daily star published on the attack of Taindaung, for details browse this link: http://www.thedailystar.net/beta2/news/the-wrath-of-the-majority/

On 5 August The International Chittagong Hill Tracts Commission (CHTC) also published a press statement the attack on indigenous peoples, for details please visit:  http://www.chtcommission.org/wp-content/uploads/2013/08/CHTC-Statement-5August20131.pdf


No comments:

Post a Comment