Courtesy: chtnews.com | Wednesday, April 23, 2014
দীঘিনালায় বিজিবি সদর দপ্তর স্থাপনে পাহাড়িদের জায়গা জবরদখল প্রক্রিয়া সম্পন্ন, ক্ষতিপূরণ গ্রহণে মালিকদেরকে চিঠি
খাগড়াছড়ির দীঘিনালার বাবুছড়ায় বিজিবি(বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) সদর দপ্তর স্থাপনের লক্ষ্যে ৪নং দীঘিনালা ইউনিয়নের ৫১নং দীঘিনালা মৌজাস্থ যত্ন কুমার কার্বারী পাড়া এবং শশী মোহন কার্বারী পাড়ায় পাহাড়িদের ৫৩ একর জায়গা জবরদখল (অধিগ্রহণ) প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে সরকার। পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি অধিগ্রহণ প্রবিধান, ১৯৫৮ অনুযায়ী এ জবরদখল (অধিগ্রহণ) করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের ভূমি হুকুম দখল কর্মকর্তা মো: আলী রিয়াজের স্বাক্ষরিত জায়গা মালিকদেরকে দেয়া এক চিঠিতে জানা গেছে। এ জবরদখলের ফলে স্ব স্ব জায়গা-জমি চিরতরে হারাতে হচ্ছে ৪৭ পরিবার পাহাড়িকে।
‘ক্ষতিপূরণের
টাকা গ্রহণ
প্রসঙ্গে’ ললিত মোহন চাকমার নামে
ইস্যুকৃত চিঠিতে
(যার স্মারক
নং-০৫.৪২.৪৬০০.০১৮.০১৪.০২.১৩(অংশ-২)-৭৯, ইস্যু
তারিখ: ১০/০৪/১৪
খ্রিষ্টাব্দ) বলা হয়েছে, ‘যেহেতু আপনার/আপনাদের তফসিলের
জমি জনস্বার্থে
খাগড়াছড়ি জেলার
দীঘিনালা উপজেলায়
বাবুছড়া বিজিবি
সদর দপ্তর
স্থাপন প্রকল্পের
জন্য (পার্বত্য
চট্টগ্রাম(ভূমি অধিগ্রহণ) প্রবিধান, ১৯৫৮
অনুযায়ী অধিগ্রহণ
করা হইয়াছে;
সেহেতু আপনার/আপনাদের জমির
ক্ষতিপূরণ গ্রহণের জন্য নিম্নলিখিত শর্ত
সাপেক্ষে আবেদন
করার জন্য
অনুরোধ করা
হইল।’
চিঠিতে শর্তাবলী হিসেবে
ভূমি মালিকের
আবেদনপত্র এবং তৎসহ নিম্নলিখিত কাগজপত্র
সংযুক্ত করার
কথা বলা
হয়েছে:
(ক) হেডম্যান কর্তৃক
সত্যায়িত ছবি,
(খ) স্থানীয়
পৌরসভা/ইউপি
চেয়ারম্যানগণের নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট, (গ) হালসনের
জমাবন্দীর কপি, (ঘ) জমির হালসন
খাজনার দাখিলা,
(ঙ) জন্ম
নিবন্ধন সার্টিফিকেট,
(চ) সংশ্লিষ্ট
ব্যাংকের ঋণমুক্ত
সার্টিফিকেট।
জমির তফসিল হিসেবে
চিঠিতে উল্লেখ
করা হয়েছে
: মৌজা নং-
দীঘিনালা মৌজা,
জেএল নং-
৫১, উপজেলা-
দীঘিনালা, হোল্ডিং নং-৪৮, দাগ
নম্বর- ৯৪৪(আং), ভূমির
পরিমাণ-১.৫০ (এক
একর পঞ্চাশ
শতক) একর,
শ্রেণী- তৃতীয়।
টাকার পরিমাণ
লেখা হয়েছে
৬৯,০০০/-(ঊনসত্তর হাজার)
টাকা।
জায়গা মালিকদের মধ্যে
১১ জনকে
এ চিঠি
দেয়া হয়েছে
বলে জানা
গেছে।
উল্লেখ্য,
গত বছর
৬ অক্টোবর
জায়গার মালিক
ও এলাকাবাসী
বিজিবি সদর
দপ্তর স্থাপনের
নামে উক্ত
জমি অধিগ্রহণ
না করার
দাবি জানিয়ে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি
দিয়েছিলেন। স্মারকলিপিতে তারা বিজিবির সেক্টর
হেডকোয়ার্টার নির্মাণের জন্য ৫৩ একর
জমি অধিগ্রহণ
পরিকল্পনা রদ করা সহ জুম্ম
শরণার্থীদের সাথে সরকারের সম্পাদিত ২০
দফা প্যাকেজ
চুক্তি মোতাবেক
নিজ জমিতে
পুনর্বাসন করার দাবি জানিয়েছিলেন। এছাড়া
বিভিন্ন সংগঠন
ভূমি জবরদখলের
প্রতিবাদ জানিয়ে
বিক্ষোভ প্রদর্শন
করেছে।
মূলত: পার্বত্য
চট্টগ্রামে ব্যাপক সেনা নির্যাতনের কারণে
১৯৮৬ সালে
উক্ত জায়গায়
বসবাসরত ৪৭
পরিবার পাহাড়ি
নিজ জায়গা-জমি ও
বসতভিটা ছেড়ে
ভারতে পালিয়ে
যেতে বাধ্য
হন। এই
সুযোগে উক্ত
জায়গাটি বাবুছড়া
সেনা ক্যাম্পের
আওতায় নিয়ে
যাওয়া হয়।
১৯৯৭ সালে
২ ডিসেম্বর
পার্বত্য চুক্তি
সম্পাদিত হলে
ভারতে আশ্রিত
শরণার্থীরা ২০ দফা প্যাকেজ চুক্তি
মোতাবেক দেশে
প্রত্যাবর্তন করে। সবার মত উক্ত
পরিবারগুলোও ফিরে আসে। কিন্তু তাদের
জমিজমা সেনা
ক্যাম্পের বেদখলে থাকায় তারা নিজ
নিজ বসতভিটায়
ফিরে যেতে
পারেননি। চুক্তি
মোতাবেক ভারত
থেকে প্রত্যাগত
শরনার্থীদের স্ব স্ব জমি ফিরিয়ে
দেয়ার কথা
থাকলেও ফেরত
দেয়া হয়নি
তাদের জায়গা-জমি। ফলে
তারা কষ্টকর
জীবন-যাপন
করতে বাধ্য
হচ্ছেন। বর্তমানে
বিজিবি সদর
দপ্তর স্থাপনে
উক্ত জায়গাটি
জবরদখল(অধিগ্রহণ)
করার ফলে
তাদের স্ব
স্ব জায়গা-জমি ফেরত
পাবার আর
কোন সম্ভাবনাই
রইলো না।
Source: http://www.chtnews.com/?p=6693
No comments:
Post a Comment