“পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি মোতাবেক স্ব-স্ব মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা চালু কর” এই দাবিকে সামনে রেখে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে খাগড়াছড়িতে এক ছাত্র সমাবেশ আয়োজন করা হয়। গতকাল শহরের মহাজনপাড়াস্থ এমএন লারমার ভাস্কর্য পাদদেশ প্রাঙ্গনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।এর আগে সকাল ১১.০০ টায় মিলনপুরস্থ কেন্দ্রীয় অফিস থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে চেঙ্গী স্কয়ারে এসে শেষ হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সভাপতি ছাত্রনেতা অং সান থুই মারমা খিলু। বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) খাগড়াছড়ি সদর থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা প্রত্যয় চাকমা, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সভাপতি ছাত্রনেতা রূপন চাকমা, সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা শান্ত চাকমা ও দিপু চাকমা প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন, পিসিপি’র সাধারণ সম্পাদক অমর সিং চাকমা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভাষা
হচ্ছে জাতিগত পরিচয়, যোগাযোগ, সামাজিক সম্পর্ক, শিক্ষা ও মানব সমাজের উন্নয়নের প্রধান
মাধ্যম। প্রত্যেক ভাষার মধ্যে একটা জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি থাকে। তাই নিঃসন্দেহে
বলা যায়, এদেশের আদিবাসীদের মাতৃভাষার চর্চা না থাকলে তাদের শত শত বছরের ঐতিহ্য, ইতিহাস
ও সংস্কৃতি হারিয়ে যেতে বাধ্য। এদেশের জাতীয় ও দাপ্তরিক ভাষা হচ্ছে বাংলা। যেহেতু বাংলাদেশের
মানুষ রক্ত দিয়ে বাংলাকে মর্যাদার আসনে বসিয়েছে তাই অন্য ভাষার প্রতিও মর্যাদাবান হওয়া
বাংলা ভাষাভাষীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। কিন্তু স্বাধীনতার ৪২ বছর পরও বাংলাদেশের কোন
সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষায়
শিক্ষার ব্যবস্থা চালু করতে পারে নি। তাই অবিলম্বে স্ব-স্ব মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা
চালু ও আদিবাসীদের মাতৃভাষার বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা প্রদানের দাবি জানান।
উল্লেখ্য যে, ১৯৯৭ সালের
২ ডিসেম্বর পার্বত্যবাসীর পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাথে তৎকালীন বাংলাদেশ
সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত “পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি” তে “স্ব-স্ব মাতৃভাষার মাধ্যমে
প্রাথমিক শিক্ষা” ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment